শুক্রবার,১৯,এপ্রিল,২০২৪
32 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Homeসম্পাদকীয়মুক্তমতযুগ যুগ জিও তুমি গণমানুষের কণ্ঠস্বর

যুগ যুগ জিও তুমি গণমানুষের কণ্ঠস্বর

জীবন্ত কিংবদন্তীর ৭৮তম জন্মদিনে রক্তিম শুভেচ্ছা

।। মুক্তার হোসেন নাহিদ ।।

’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন থেকে হালের সন্ত্রাস-দুর্নীতি ও মৌলবাদী আস্ফালন-এর বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর রাশেদ খান মেনন। ধনাঢ্য পরিবারে জন্ম নিয়েও আজো শ্রমজীবির হাতেই হাত রাখেন। ‘৯২-এর ১৭ আগস্ট তোপখানায় পার্টি কার্যালয়ের সামনে প্রগতি ও স্পষ্টবাদী এই কণ্ঠ রোধে হামলা করেছিল হায়েনারা। কিন্তু জনতার ভালোবাসায় গুলিবিদ্ধ মেনন ফিরে এসেছেন মৃত্যুর দুয়ার থেকে। ‘জীবন দখল করো এবং বিলিয়ে দাও’-এই ব্রত নিয়ে মৃতুঞ্জয়ী মেনন ২৯ বছর ধরে লড়ছেন গণমানুষের সংগ্রামে। রাজনৈতিক অঙ্গনের জীবন্ত এই কিংবদন্তী এ বছর পা রাখলেন ৭৮-এ। গত ১৮ মে ছিল তার ৭৮তম জন্মদিন। ১৯৪৩-এর এ দিনেই মেনন জন্মগ্রহণ করেন পিতার কর্মস্থল ফরিদপুর শহরে। পিতৃভূমি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচরের ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে। পিতা বিচারপতি আব্দুল জব্বার খান ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পিকার। মা সালেহা খাতুন।
আয়ুববিরোধী সামরিক শাসন, ‘৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণ অভ্যূত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, জিয়া ও এরশাদের সামরিক শাসন, নব্বইয়ের গণঅভ্যূত্থান, চারদলীয় জোটের দুঃশাসন এবং সা¤্রাজ্যবাদ, মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী লড়াই এবং শ্রমজীবি মানুষের অধিকার আদায়ে মেনন লড়ছেন ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে। সমতা ও ন্যায্যতার লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা রক্ষার সংগ্রামে এগিয়ে যাচ্ছেন সময়ের সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে। লড়ছেন শাসক গোষ্ঠীর গণবিরোধী নীতির বিরুদ্ধেও। নষ্ট রাজনীতির বিপরীতে সুস্থ ধারার রাজনীতির আইকন মেনন বানের জলে ভেসে আসা কোনো নাম বা হঠাৎ গজে ওঠা কোনো নেতাও নন, লড়াই-সংগ্রামের এক পরীক্ষিত যোদ্ধা। মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবাজ লুটেরা গোষ্ঠীর হৃদপি-ের কম্পন।
ষাটের দশকের কিংবদন্তী ছাত্র নেতা মেনন ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এসেছিলেন আয়ুব বিরোধী সামরিক শাসন ও বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়লয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি ছিলেন ’৬৩-৬৪ সালে। ’৬৪-৬৭ সালে ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি। ‘৬২-তে নিরাপত্তা আইনে প্রথম গ্রেপ্তারের পর ’৬৯ সাল অবধি বিভিন্ন মেয়াদে কারাবরণ করেছেন। জেলে থাকাকালীন তিনি বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে আসেন। ‘৬৪-র সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধ সংগ্রামে তার অনন্য ভূমিকা ছিল। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাবর্তনে কুখ্যাত মোনায়েম খানের আগমনের বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি জেল থেকেই এম এ পরীক্ষা দেন। ‘৬৯-এর গণঅভূত্থানে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মেনন মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন কৃষক সমিতিতে যোগ দিয়ে সন্তোষে ঐতিহাসিক কৃষক সম্মেলনে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ‘৭০-এর ২২ ফেব্রুয়ারি পল্টনের জনসভায় প্রথম প্রকাশ্য ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলা’ ঘোষণাকারী বামপন্থী নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রাশেদ খান মেনন। এ কারণে ইয়াহিয়া’র সামরিক আদালত তাকে ৭ বছর সশ্রম কারাদ- এবং সম্পত্তির ৬০ ভাগ বাজেয়াপ্ত করেন। আত্মগোপনে থেকেই কৃষক সংগঠন গড়ে তোলেন। ‘৭১-এর ২৫ মার্চ পল্টনে শেষ জনসভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও পাকিস্তান সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ২৫ মার্চ কালরাতের গণহত্যার পর কমরেড মেনন নরসিংদীর শিবপুরকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের কাজ শুরু করেন। এরপর ভারতে গিয়ে সকল বামপন্থী সংগঠন নিয়ে ‘জাতীয় মুক্তি সমন্বয় কমিটি’ গঠন করে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের প্রতি সমর্থন জানান। তারপরে দেশের অভ্যন্তরে নানা স্থানে কেন্দ্র করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীরা অনেক ক্ষেত্রেই আগুয়ান ভূমিকা পালন করলেও গণমাধ্যমে বামপন্থীদের ইতিহাস সেইভাবে প্রচারে আনা হয় না।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (লেনিনবাদী) গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ‘৭৩-এ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যাপ (ভাসানী)-প্রার্থী হয়ে বরিশালের দু’টি আসন থেকে নির্বাচন করে একটি আসনে জয়ী হলেও পরে পরাজিত ঘোষণা করা হয়। ভাসানী ন্যাপ থেকে বেরিয়ে ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি) গঠিত হলে মেনন সেই পার্টির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হন ‘৭৪-এ। কিন্তু ‘৭৮-এ ইউপিপি জেনারেল জিয়ার জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টে যোগ দিলে মেনন ইউপিপি ত্যাগ করে ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন’ গড়ে তোলেন। ‘৭৯-তে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় ওয়ার্কার্স পার্টি পুনঃসংগঠিত হলে তিনি সম্পাদকম-লীর সদস্য হন। ’৮২-তে জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধেও মেনন লড়েছেন সোচ্চার কণ্ঠে। তার সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রথম বিবৃতি তিনি’ই দিয়েছিলেন। এই সময়ে সম্মিলিত কৃষক সংগ্রাম পরিষদ এবং শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্যপরিষদ (স্কপ) গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তার অগ্রগামী ভূমিকা রয়েছে। ’৮৬-তে সামরিক শাসনের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে বিরোধ সৃষ্টি হলে ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ৫ বাম দল ১৫ দল থেকে বেরিয়ে ৫ দলীয় ঐক্যজোট গঠন করে। ওই নির্বাচন বর্জন এবং ৫ দলীয় জোট গঠনেও মেননের ভূমিকা ছিল অনন্য। এ সময় ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ঐক্যবদ্ধ হলে রাশেদ খান মেনন ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হন। ‘৯০-এর গণঅভ্যূত্থানে তিন জোটের রূপরেখা ও ঘোষণা প্রণয়নে রাশেদ খান মেনন নেতৃত্বের সামনে কাতারে থেকে অন্যতম রূপকারের ভূমিকা পালন করেন। ওই গণঅভ্যূত্থানে সামরিক এরশাদশাহীর পতনের পর ‘৯১-র নির্বাচনে তিনি বরিশালের বাবুগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সংসদ সদস্য থাকাকালীন স্বাধীনতার শত্রু জামাত-শিবির বিরোধী সংগ্রাম, মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক তৎপরতা, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-এর কাছে সরকারের নতজানু নীতি, কাঠামোগত সংস্কার, পাট শিল্পের ধ্বংস সাধন, মুক্ত বাজার অর্থনীতির নামে লুটপাটের অর্থনীতিক নীতি অনুসরণের দৃঢ় বিরোধিতা করেন। কথা বলেন কৃষক, খেতমজুর ও শ্রমজীবি মানুষের পক্ষে। ‘৯৪-র ঐক্য কংগ্রেসে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ‘বামফ্রন্ট’ গঠন করেন। ‘৯৮-এ গড়ে তোলেন ১১ দল। তেল-গ্যাস-বন্দর জাতীয় সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটি গঠনেও তার অনন্য ভূমিকা রয়েছে।
২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শাসনামলে দেশব্যাপী জঙ্গিবাদী তা-বের বিরুদ্ধেও গর্জে ওঠেন মেনন। ওই সরকারের প্রশ্রয়ে জঙ্গিবাদের যে উত্থান ঘটে তার বিরুদ্ধেও প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে ওয়ার্কার্স পার্টি। এছাড়া বিএনপি-জামাত জোটের দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে ১১ দল এবং আওয়ামী লীগ, জাসদ, ন্যাপসহ চৌদ্দ দলের আন্দোলন সংগ্রামে কমরেড মেনন ছিলেন অগ্রগামী নেতা। চৌদ্দ দলের ২৩ দফা ন্যুনতম কর্মসূচি প্রণয়নেও তার মুখ্য ভূমিকা রয়েছে।
ওয়ান ইলেভেনেও সাহসী কণ্ঠস্বর ছিলেন রাশেদ খান মেনন। কারারুদ্ধ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে তিনিই প্রথম সোচ্চার হন। সোচ্চার দাবি তোলেন নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের। এছাড়া জরুরি অবস্থা জারির মধ্যেও মেনন সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বধায়ক সরকারের বস্তি, রিক্সা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নামে হাট-বাজার উচ্ছেদ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেন। সেনা নিয়ন্ত্রিত তথাকথিত ‘মাইনাস টু থিয়োরি’, তথাকথিত সংস্কার প্রস্তাব ও বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক দলসমূহে ভাঙন সৃষ্টি, ‘কিংস পার্টি’ গঠন এবং সর্বোপরি একটি নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।
২০০৮-এর নির্বাচনে রাশেদ খান মেনন ঢাকা-৮ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী প্রণয়নেও বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ছিলেন আদিবাসী সংসদীয় ককাসের সভাপতি। ২০১৪-র নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৮ থেকে পুনরায় সাংসদ হন। এ মেয়াদে কমরেড মেনন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। তার দায়িত্বকালীন সময়ে স্বাধীনতার পর বিমান প্রথম লাভের মুখ দেখেন। পরে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। বিমান থেকে সমাজকল্যাণে এসে কমরেড মেননের অভিমত, “আকাশ থেকে মাটিতে নামলাম।” কারণ জনগণের নেতা জনতার পাশে আসলেন। গরিব মানুষের সেবা করতে পারবেন। ২০১৮ সালে কমরেড মেনন তৃতীয়বারের মতো ঢাকা-৮ এর এমপি হন। এ সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, শত্রু সম্পত্তি আইন বাতিল, শ্রমিক স্বার্থবিরোধী শ্রম অধ্যাদেশ বাতিল, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন ও মজুরির নিশ্চয়তা, জাতীয় শিল্প রক্ষা, তেল-গ্যাস সম্পদ সহ শিল্প সম্পদ রপ্তানি নিষিদ্ধকরণ, নারী নীতি বাস্তবায়ন, পরিবেশ রক্ষা, প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও শিশু অধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সোচ্চার ছিলেন। এখনো আছেন। পাটকল-চিনিকল বন্ধসহ সরকারের গণবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে এখনো এখনো তার কণ্ঠ অপ্রতিরোধ্য। দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধেও কথা বলতে দ্বিধা করেন না। সুযোগ পেলেই তিনি শোষণ-বঞ্চনা, নির্যাত-নিপিড়ন, লুটেরাদের দুর্নীতি-লুটপাটের কথা তুলে ধরেন অকপটে। উন্মোচন করেন ধর্মবাদী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর মুখোশ।
অনেকেই বলেন, মন্ত্রীত্ব না পাওয়ার বেদনায় মেনন উল্টাপাল্টা বলেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি-কমরেড মেনন ক্ষমতা নয়, জনতার সাথী। জাতির দুঃসময়ে এগিয়ে আসাই তার রাজনৈতিক আদর্শ। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রীত্বের সুযোগ থাকার পরেও তিনি তা গ্রহণ করেন নি। ‘৭৮-এ জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টে মন্ত্রীত্ব না নিয়ে ইউপিপি ত্যাগ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেমেছেন। প্রত্যাখ্যান করেছেন এরশাদের মন্ত্রীত্বের প্রস্তাবও। পার্টির সিদ্ধান্তে রাশেদ খান মেনন যেমন ২০১২ সালে মহাজোট সরকারের মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব যেমন প্রত্যাখ্যান করেছেন, তেমনি দেশ-সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে পার্টির সিদ্ধান্তেই ২০১৩ সালে সর্বদলীয় সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হন। বর্তমানে বাংলাদেশে উন্নয়ন যেমন হচ্ছে, তেমনি লুটপাটের মহোৎসবও চলছে। গোটা বাংলাদেশ আজ দুর্নীতিবাজ-লুটেরা দুর্বৃত্তদের হাতে বন্দী। ফলে সঠিক সময়ে গর্জে উঠেন মেনন। তিনি বলেছেন, ‘করোনার চেয়েও আমলাতন্ত্র ভয়ঙ্কর”, বলেছেন, “দুর্নীতির ঘুনপোকা উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করছে।” প্রতিবাদ করেছেন সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অব্যবস্থাপনা আর দুর্নীতির চিত্র নিয়েও। কমরেড মেনন এর আগেও সাংসদ হয়েছেন। দলীয় ব্যানারে দলীয় মার্কা নিয়ে। নৌকার জোরে নয়। তার চারপাশের অনেকেই আদর্শ ত্যাগ করে ফায়দা লুটেছে। কিন্তু মেনন ছিলেন আদর্শে অবিচল। ১৪ দলীয় জোট সরকারের মন্ত্রীত্ব নিয়েছিলেন দেশের প্রশ্নে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা রক্ষার প্রশ্নে। সংবিধান ও গণতান্ত্রিক যাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য। নিজের স্বার্থে নয়। এটাই রাশেদ খান মেননের রাজনৈতিক নীতি ও আদর্শ। লড়াই-সংগ্রামের জ্বলন্ত প্রদীপ। শ্রমজীবি মানুষের সংগ্রামের ভরসাস্থল। কমরেড মেনন সাম্রাজ্যবাদ-সাম্প্রদায়িকতা ও লুটেরা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। নতুন প্রজন্মের লড়াইয়ের প্রেরণা। যুগ যুগ জিও তুমি কমরেড মেনন। ৭৮তম জন্মদিনে জানাই রক্তিম শুভেচ্ছা। আরো বহু বসন্ত থাকুন লড়ায়ের ময়দানে, সাহসী কণ্ঠস্বর হয়ে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখকঃ সাবেক ছাত্রনেতা

সর্বশেষ