রসায়ন’টা এবার বুঝলাম না!-

সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী’র বাংলাদেশ সফর।

২০১৫ সালে মোদি দর্শনে সবাই হামাগুড়ি দিয়েছিলেন। হয়েছিলেন মহাখুশি।সেই সময় নরেন্দ্রমোদির বিজয়ে বাংলাদেশের ডানপন্থার সব শক্তি ও গোষ্ঠী মোদির” বিজয় উৎসব” উৎযাপনে মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন। এবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসবের রাষ্ট্রাচারে মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশে। দেশটির অভ্যুদ্বয়েভারতের সরকার ও ভারতের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের ছিল রক্তের বাঁধন।স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উৎযাপনে সরকার প্রধান হিসেবে মোদি আসবেন এটাই তো স্বাভাবিক।বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’র উদযাপন উৎসবকে ঘিরে মোদির আগমন ঠেকাতে এবার যা ঘটানো হলো তার রাজনীতির রসায়নটা কি!(?) তা উপরসা বোঝা মুস্কিল। মোদির আগমনের প্রাক্কালে শাল্লায় সংখ্যালঘুসম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা,পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ সবকিছু দেখে মনে হলো- এটা মুক্তিযুদ্ধকে চ্যালেঞ্জ করার টেস্ট কেস।

দুই দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর এ এক ড্রেস রিয়ার্সেল।কৌশল ভিন্ন হলেও লক্ষ্য এক ও অভিন্ন।কৌশল,হিন্দু ও মুসলমানে বিভাজন।৪৭ -এর রাজনীতির ধারার পুনঃপ্রবর্তন ঘটানোর নিপুন খেলা।এ্যাকশন টু অপজিট রিয়াকশন।রাষ্ট্রাচারের চৌহদ্দি ভেঙে ঘটাকরে নরেন্দ্রমোদির মতুয়া সম্প্রদায়ের মন্দির পরিদর্শনসহ অনান্যা মন্দির আনুষ্ঠানিকতায় যোগদান কতখানি যুক্তিযুক্ত – এর প্রতিবাদ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ সেদেশের অনেক বাম- প্রগতিশীল সংগঠন। বাংলাদেশে নরেন্দ্রমোদির আগমন ঠেকানো যায়নি।সম্ভবও ছিল না। কিন্তু, দুই দেশের জনমনে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ও বিভাজন সৃষ্টি করা গেছে! কতটুকু!ভারতের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর ওই রসায়নের উত্তর কিছুটা হলেও খোলাসা হবে।তবে, সাপের মূখে চুমু খাওয়ার কৌশল কী ভয়াবহ রূপ নিতে পারে তা প্রমাণিত। এই অপকৌশল পাল্টাতে না পারলে বিপন্ন হবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের অগ্রগতি, অর্জন,অগ্রযাত্রা।সবকিছুই।আর গণতন্রের ধুঁয়া তোলে ওই সাপের লেজ দিয়ে কান চুলকানোর কৌশল কোনভাবেই গণতন্ত্রের জন্য শুভকর হবেনা।

লেখকঃ নজরুল ইসলাম হক্কানী, পলিটব্যুরো সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।