মঙ্গলবার,১৮,নভেম্বর,২০২৫
29 C
Dhaka
মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৮, ২০২৫
প্রচ্ছদসীমানা পেরিয়েরাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেবেন, ট্রাম্প

রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেবেন, ট্রাম্প

পশ্চিমা সামরিক জোট নেটো রুশ তেল কেনা বন্ধ করলেই কেবল যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে ‘প্রস্তুত’ বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিতে প্রস্তুত। তবে পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর দেশগুলো রুশ তেল কেনা বন্ধ করলেই কেবল তিনি তা করবেন।

ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, নেটো দেশগুলো একবার এ বিষয়ে রাজি হয়ে গেলে এবং পদক্ষেপ নিলে তিনি রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত রয়েছেন।

ট্রাম্প বারবারই মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে এসেছেন। তবে ক্রেমলিন তার নির্ধারণ করে দেওয়া সময়সীমা ও নিষেধাজ্ঞার হুমকি উপেক্ষা করেছে। তারপরও ট্রাম্প এতদিন কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেননি।

রুশ তেল কেনাকে তিনি ‘অত্যন্ত মর্মন্তুদ’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং নেটোকে চীনের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। কারণ তার মতে, এতে রাশিয়ার ওপর চীনের ‘শক্ত নিয়ন্ত্রণ’ দুর্বল হবে।

নেটো সদস্য দেশগুলোর উদ্দেশে লেখা এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “আমি পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত, আপনারা যখন প্রস্তুত হবেন তখনই। শুধু বলুন কবে?”

তিনি আরও বলেন, “কারও কারও রাশিয়ার তেল কেনা হতবাক করে দেওয়ার মতো। এতে রাশিয়ার সঙ্গে আপনাদের দর-কষাকষির অবস্থান ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।”

ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার জ্বালানি কেনা বন্ধ করা এবং চীনের ওপর ভারি শুল্ক আরোপ করার পদক্ষেপ ইউক্রেইনে যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে অনেকটাই সহায়ক হবে। যুদ্ধ শেষে নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেওয়া হবে।

রাশিয়ার জ্বালানির ওপর ইউরোপের নির্ভরশীলতা ইউক্রেইনে মস্কোর সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে নাটকীয়ভাবে কমে গেছে।

২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রায় ৪৫ শতাংশ গ্যাস রাশিয়া থেকে আমদানি করত। এবছর তা প্রায় ১৩ শতাংশে মেনে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ট্রাম্পের কথা থেকে বোঝা যায়, তিনি মনে করেন এই হ্রাসই যথেষ্ট নয়।

ট্রাম্পের এই বার্তা এসেছে এমন এক সময়ে যখন নেটো মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার উত্তেজনা বেড়েছে। বুধবার এক ডজনেরও বেশি রুশ ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছিল।

ওয়ারশ বলেছে, এটি ছিল ইচ্ছাকৃত অনুপ্রবেশ। তবে রাশিয়া ঘটনাটিকে হালকাভাবে নিয়ে বলেছে, পোল্যান্ডের কোনও স্থাপনাকে নিশানা করার পরিকল্পনা তাদের ছিল না।

ওদিকে, ডেনমার্ক, ফ্রান্স ও জার্মানি নেটোর পূর্ব সীমান্তকে শক্তিশালী করতে নতুন মিশনে যোগ দিয়েছে। তারা সেখানে সামরিক সরঞ্জামও সরিয়ে নেবে।

গত সপ্তাহে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছে রুশ তেল ও গ্যাস কেনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

২০২২ সালের পর থেকে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানিতে প্রায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি ইউরো ব্যয় করেছে, যা ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালানোর জন্য মস্কোকে অর্থ জুগিয়েছে বলে মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার’।

ইইউ আগে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিল ২০২৮ সালের মধ্যে রাশিয়ার জ্বালানি কেনা পর্যায়ক্রমে বন্ধ করবে তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে এই প্রক্রিয়া দ্রুত হোক।

ট্রাম্পের বার্তাটি অবশ্য ইইউ-কে নয়, সরাসরি নেটোর উদ্দেশে দেওয়া। এর মধ্যে তুরস্কও আছে, যারা রাশিয়ার তেলের অন্যতম বড় ক্রেতা দেশ।

রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা নেটো জোটের একমাত্র সদস্য দেশও তারা। ফলে তুরস্ককে রুশ তেল কেনা বন্ধে রাজি করানো অনেক বেশি কঠিন হতে পারে।

 

 

সর্বশেষ