রবিবার,১৬,নভেম্বর,২০২৫
28 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৬, ২০২৫
প্রচ্ছদজাতীয়বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়, জি এম কাদের

বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়, জি এম কাদের

বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয় দাবি করে, আরেকটি ‘নিরপেক্ষ সরকারের’ অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয় মহিলা পার্টির মতবিনিময় সভায় তিনি এমন দাবি করেন।

একটি দলের নাম না নিয়ে জিএম কাদের বলেন, “শেখ হাসিনার সময় ছিল দলের সঙ্গে দলের লোকের প্রতিযোগিতা। এখন সরকারি এবং আধা সরকারি দলের মধ্যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। একটি দল রয়েছে, সেই দলের দুইজন সদস্য সরকারে রয়েছে, তারা যেখানে যাচ্ছে সেখানে প্রটোকল পাচ্ছে। জামায়াতসহ তারা মোটামুটি সরকারের সব সুবিধা ভোগ করছে। তারা যা করতে চাইছে সব করতে পারছে। “এখনও ৫০ ভাগের বেশি লোককে বাইরে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। শেখ হাসিনার সময়েও তাই হয়েছে, এখনও তাই চলছে। শেখ হাসিনা ৫০ শতাংশকে বাইরে রাখার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলেন, এখন প্রশাসনিক আদেশে করা হচ্ছে।”

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সব নির্বাচনে অংশ নেওয়া জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “সরকারি দল বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে ইচ্ছুক, আধা সরকারি দল চাচ্ছে দ্রুত নির্বাচন। সেখান থেকেই ৫, ১০, ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকার বিষয়টি এসেছে। দেশের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছেন। তারা পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ সব জায়গা দখল করতে চাইছে। সংবিধান ও শাসন পদ্ধতি তাদের নিজেদের মতো করে গড়তে চাচ্ছেন। “নিজস্ব ধ্যান ধারনা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে, জনগণ তাদেক সেই ম্যান্ডেট দেয়নি। চাপানো সংস্কার কেউ মানবে না। ক্ষমতার লোভ ভালো না, অতীতে আমরা দেখেছি ক্ষমতার লোভের পরিণতি। আমরা একই ভুল, একই গর্তের পড়তে চাচ্ছি।”

জিএম কাদেরের অভিযোগ, “এই সরকার নিরপেক্ষ নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সেখানে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হওয়া উচিত। জনগণ ঠিক করবে কোন দলকে গ্রহণ করবে, সরকারি ও আধা সরকারি দলের মধ্যে নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। বিনিয়োগ আসবে না, দেশ একটা বিপর্যয়ের দিকে যেতে পারে। তেমন এক তরফা নির্বাচনে যাব কি যাব না, সেটা ভেবে দেখতে হবে। আগামী নির্বাচনে যথেষ্ট অর্থ ও শক্তি ব্যবহার করা হবে; শেখ হাসিনা যেভাবে করেছিলেন। “সরকার মনে করছে জিএম কাদের বিহীন জাতীয় পার্টি হলে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যাদের কে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তেমন নেতাদের দিয়ে পার্টি করতে চাইছে। জাতীয় পার্টির কোনদিন দোসরগিরি করেনি, যারা দালালি করেছে তারা চলে গেছে। চাপিয়ে দেওয়া রাজনীতি জাতীয় পার্টি গ্রহণ করবে না। সব ধরনের মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না।”

তিনি বলেন, “দেশের মানুষ ধার্মিক কিন্তু মধ্যপন্থি। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি দেশের জন্য সামঞ্জস্য নয়। যখন আমি শুনি, মহিলাদের গণধর্ষণের শাস্তি ঘোষণা করেছে। ইসলাম ধর্ম কখনও এসব গ্রহণ করে না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি মেনে নেব না।” জাতীয় মহিলা পার্টির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জিএম কাদের বলেন, “একটি দলের নেতা বলছে, তারা নির্বাচিত হলে মেয়েরা মেয়েদের সামনে নাচবে, এটা কি দেশের লোক গ্রহণ করবে, হয়তো শাস্তির দিকে গেলে মানতে বাধ্য হবে। মহিলাদের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাবে। যে কারণে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে।

“হ্যাঁ-না ভোটের কথা বলেন, আমরা দেখেছি ১১০ শতাংশ হ্যাঁ ভোট পড়েছে। ফ্যাসিবাদ কি দেখেছেন! আগের ফ্যাসিবাদ দমন করেছি, এই ফ্যাসিবাদও দমন করা হবে। জাতীয় পার্টির প্রত্যেকটি কর্মী জীবন দিতে প্রস্তুত আছে।” তিনি বলেন, “প্রজন্ম একাত্তর একটি সভা আয়োজন করেছিল। সেখানে যারা হৈ হৈ করেছে, তাদের কিছু বলা হলো না। এর মাধ্যমে মেসেজ দেওয়া হলো, একাত্তর নিয়ে কথা বলবেন না, যাদেরকে হত্যা করেছে, সম্ভ্রম লুট করা হয়েছে তারা কি মেনে নেবে। যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে কাজ করেছে তাদের কাছে ছবক নিতে হবে!”

জাতীয় মহিলা পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক হেনা খান পন্নীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী, কো-চেয়ারম্যান সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দীন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, আলমগীর শিকদার লোটন, দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম।

সর্বশেষ