পাঁচ দাবিতে আন্দোলন করা ৮ দল সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে খুলনা মহানগরীর শিববাড়ী বাবরী চত্বরে বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। সেখানে দলগুলোর নেতারা ঐক্যের প্রতি জোর দিয়ে দাবি আদায়ের কথা বলেছেন। ঐক্যের ভিত্তিতে তারা সংসদে যেতে চায়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করিম।
সমাবেশে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আরও একবার ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে।’
চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘অনেকে বলেন, আমারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নই। কিন্তু আমারা নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তত। কিন্তু তারাই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে হিসাব-নিকাশ করে দেখেছেন তাদের পায়ের তলায় মাটি সরে গেছে। এবার নির্বাচন নিয়ে আপনারাই ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। গুন্ডামি করে, সেন্টার দখল করে, সন্ত্রাসী চালিয়ে ক্ষমতার চেয়ারে বসবেন। সেদিন ভুলে যান। সে সুযোগ আর আপনারা পাবেন না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে দেখতে পাচ্ছি, বাংলাদেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত। ৭২-এর বাকশালপন্থি আর একভাগ, ২০২৪ সালের বিপ্লবপন্থি শক্তি।’ তিনি বলেন, ‘রক্তের সাগর পেরিয়ে ২৪-এর জুলাই বিপ্লবের পর যেই ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত করা হয়েছে, সেই ফ্যাসিবাদ বাংলার মাটিতে আসবে না। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি কার্যকরে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। জুলাই সনদকে চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি দিতে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। একসঙ্গে তালগোল পাকিয়ে এই মাহাত্মকে নষ্ট করবেন না। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করা হোক। ব্যর্থ হলে ইন্টেরিম সরকার ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। কলঙ্ক নিয়ে আপনাদেরও বিদায় নিতে হবে। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে।’ তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
একসঙ্গে আন্দোলন করা ৮ দল হলো- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি।
এ দলগুলো ৫ দাবি হলো- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণভোট আয়োজন, নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, আওয়ামী সরকারে বিচার দৃশ্যমান করা, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।



