বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কিছু মানুষ ও গোষ্ঠীর তরফে ইদানিং বিভিন্ন জায়গায় কিংবা সোশাল মিডিয়ায় বলতে শোনা যায় ‘অমুককে দেখলাম (ক্ষমতায়), তমুককে দেখলাম, এবার অমুককে দেখুন’। এই যাদের কথা বলা হচ্ছে ‘তাদেরকে দেশের মানুষ একাত্তর সালেই দেখেছে’।
রোববার বিকালে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
দিনব্যাপী আলোচনা অনুষ্ঠানের সমাপনীতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান ‘সামনের দিনগুলো ভালো নয়, অনেক কঠিন সময় অপেক্ষা করছে’ বলেও মন্তব্য করেন। এমন প্রেক্ষাপটে তিনি সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান। কোনো দল বা কারও নাম না নিয়ে ‘অমুককে দেখলাম‘, ‘এবার অমুককে দেখুন’ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কিছু কিছু মানুষ বা কোনো কোনো গোষ্ঠী ইদানিং বলতে শুনেছি বা বিভিন্ন জায়গায় কেউ কেউ সোশাল মিডিয়ায় বলে যে, অমুককে দেখলাম, তমুককে দেখলাম তমুককে দেখলাম, এবারও অমুককে দেখুন। যাদের কথা বলে অমুককে দেখুন। তাদেরকেতো দেশের মানুষ একাত্তর সালে দেখেছে। ১৯৭১ সালে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে কীভাবে লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। ঠিক যেভাবে পতিত স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার আগে হাজারো হাজারো মানুষকে হত্যা করেছিল ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য… এই যাদেরকে কেউ কেউ বলে যে একবার দেখুন না এদেরকে। তাদেরকে দেশের মানুষ একাত্তর সালেই দেখেছে। তারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার্থে লক্ষ লক্ষ মানুষকে শুধু হত্যাই করেনি, তাদের সহকর্মীরা কিভাবে মা-বোনদের ইজ্জত পর্যন্ত লুট করেছিল। এই কথাটি আমাদেরকে মনে রাখতে হবে।”
তারেক রহমান বলেন, ‘‘আমরা শুনেছি একটি রাজনৈতিক দলের কিছু ব্যক্তি বা বেশ কিছু … বিভিন্ন জিনিসের টিকিট বিক্রি করে বেড়াচ্ছে, বিভিন্ন জিনিসের কনফার্মেশন দিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন আমি যতটুকু বুঝি, অনেক মুরুব্বি ব্যক্তি আছেন, বুজুর্গ ব্যক্তি আছেন ধর্মীয় বিষয়। আমি একজন সাধারণ নরমাল একজন মুসলমান হিসেবে আমি যতটুকু বুঝি, যা আমার না। আমি যদি তা দেবার কথা বলি। অর্থাৎ যেটি আমার না সেটির কমিটমেন্ট যদি করি তাহলে আমি তার সাথে পাল্লা দেখছি। অর্থাৎ দোজখ-বেহেশত দুনিয়ার সবকিছুর মালিক আল্লাহ। যেটার মালিক আল্লাহ, যেটার কথা একমাত্র আল্লাহ তালাই বলতে পারে। সেখানে যদি আমি কিছু বলতে চাই আমার নরমাল দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বুঝি যে সেটি হচ্ছে শিরিক। এটি হচ্ছে শিরিকের পর্যায়ে পড়ে।”
তিনি বলেন, ‘‘তোমাদেরকে (ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের) ঘরে ঘরে যেতে হবে এবং বলতে হবে যারা এইসব কথা বলে তারা শিরিক করছে। আপনি যদি তাদের কথা শুনেন আপনিও শিরিকের পর্যায়ে পড়ে যাবেন। যার অধিকার একমাত্র আল্লাহ তালার সেটি একমাত্র আল্লাহর অধিকার। কে কোথায় যাবে? কার ইহকালে কী হবে, পরকালে কী হবে তার অধিকার একমাত্র ডিসাইড করার অধিকার একমাত্র আল্লাহর। কাজেই যারা এসব কথা বলে তারা ঈমানে শিরিক করছে। একজন মুসলমান হিসেবে আমি সেটাই বুঝি। এই কথাগুলো তোমাদেরকে পৌঁছে দিতে হবে।”
রাজধানীর ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’ শীর্ষক এ আয়োজনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সকালে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন রকম ‘ষড়যন্ত্র, বিভিন্ন জায়গায়’ হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার দীর্ঘ বর্ক্তৃতায় বলেন, ‘‘আমি গত ৫ অগাস্টের পর থেকে বলে আসছি যে, আমাদের সামনের সময়গুলো কিন্তু খুব ভালো নয়, সামনে অনেক কঠিন সময়ে অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র, বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে।”
তিনি বলেন, ‘‘এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পারে এই দেশের জনগণ এবং এই ষড়যন্ত্র জনগণকে সাথে নিয়ে রুখে দিতে পারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। এই ষড়যন্ত্র এই ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে- গণতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্র। আমরা যদি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, যেকোনো মূল্যে জনগণের মতামতকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি তাহলে অবশ্যই অনেক ষড়যন্ত্রকে আমরা রুখে দিতে পারব। তবে ষড়যন্ত্রকে রুখে সম্ভব হলেও সামনে অনেক কঠিন সময় বলে তার শঙ্কার কথা দীর্ঘ বক্তৃতায় তুলে ধরেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।



