“ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করবেন। হোয়াইট হাউস এ তথ্য জানিয়েছে। এ বৈঠককে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী ধাপ নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আলোচনায় লেবাননে হিজবুল্লাহ ও ইরান নিয়ে ইসরায়েলের উদ্বেগও অন্তর্ভুক্ত থাকবে”
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে নেতানিয়াহু জানান, ট্রাম্প তাকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এ সময় ওয়াশিংটন চাইছে, ফিলিস্তিনি উপত্যকায় অন্তর্বর্তী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের উদ্যোগ এগিয়ে নিতে। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্পের মার-এ-লাগো বিচ ক্লাবে আতিথেয়তা গ্রহণ করতে পারেন নেতানিয়াহু। এর আগে ২২ ডিসেম্বর তিনি বলেছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ, ইরান ও লেবানন ইস্যু উঠে আসবে।
ওয়াশিংটন এই তিনটি ফ্রন্টেই যুদ্ধবিরতি মধ্যস্থতা করেছিল। তবে যুদ্ধের ফলে প্রতিপক্ষরা প্রাথমিকভাবে দুর্বল হলে পড়লেও তাদের পুনরায় শক্তি সঞ্চয় নিয়ে ইসরায়েল উদ্বিগ্ন। এদিকে অক্টোবরে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার, হামাসের অস্ত্র সমর্পণ এবং উপত্যকায় হামাসের শাসনক্ষমতা পরিত্যাগের কথা বলা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত সপ্তাহে বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তী প্রশাসন—‘বোর্ড অব পিস’ ও ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাটদের নিয়ে গঠিত একটি সংস্থা—শিগগিরই গঠিত হোক, যেন ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী নির্ধারিত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের আগে গাজা পরিচালনা করা যায়।
তবে ইসরায়েল ও হামাস পরস্পরের বিরুদ্ধে চুক্তির বড় ধরনের লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে এবং পরবর্তী ধাপের আরও কঠিন পদক্ষেপগুলো গ্রহণে তারা এখনও ঐকমত্যে আসেনি। হামাস অস্ত্র সমর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং শেষ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহও ফেরত দেয়নি। এদিকে ইসরায়েলি সেনারা উপত্যকার প্রায় অর্ধেক এলাকায় অবস্থান বজায় রাখায় হামাস আবারও নিয়ন্ত্রণ জোরদার করছে।
ইসরায়েল ইঙ্গিত দিয়েছে, হামাস শান্তিপূর্ণভাবে নিরস্ত্র না হলে আবার সামরিক অভিযান শুরু করা হবে। লেবাননে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে হওয়া যুদ্ধবিরতি ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে এক বছরের বেশি সময়ের সংঘর্ষের অবসান ঘটায়। এতে ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার কথা বলা হয়, বিশেষ করে ইসরায়েলসংলগ্ন নদীর দক্ষিণাঞ্চলে।
লেবানন সরকার বলছে, সময়সীমার মধ্যে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার কাজ প্রায় শেষের পথে। তবে গোষ্ঠীটি অস্ত্র ছাড়ার আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না। এদিকে, ইরান গত সপ্তাহে জানিয়েছে, চলতি মাসে তারা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া চালিয়েছে। নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল ইরানের সঙ্গে সংঘাতে যেতে চায় না, তবে এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে তারা অবগত এবং তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে তেহরানের তৎপরতা নিয়ে আলোচনা করবেন। জুন মাসে ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে এরপর থেকেই তিনি তেহরানের সঙ্গে সম্ভাব্য একটি চুক্তির কথাও উত্থাপন করে আসছেন।
সূত্র: রয়টার্স



