Wednesday,4,December,2024
27 C
Dhaka
Wednesday, December 4, 2024
Homeরাজনীতিব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব: ধীরে চলো নীতি পুলিশের-নজর ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব: ধীরে চলো নীতি পুলিশের-নজর ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দীপক চৌধুরী বাপ্পী: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত ইসলামের তা-বের ঘটনায় ‘অভিযুক্তদেরকে’ ধরতে প্রতিদিনই গ্রেপ্তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তার হয়েছে ৩৩৬ জন। যদিও গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে হেফাজতের উল্লেখযোগ্য কোনো নেতা নেই।
পুলিশের একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ভিডিও ফুটেজে থাকা সরাসরি হামলায় অংশগ্রহনকারিদেরকে গ্রেপ্তারের আওতায় আনা হবে। পরবর্তীতে ইন্দনদাতাসহ অন্যান্যদেরকেও ধরা হবে। তবে সেটা যথেষ্ট প্রমাণ ও সময় সাপেক্ষ।
তাণ্ডবের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে নজর দেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে। ইতোমধ্যেই এসবের মাধ্যমে সংগঠিত হওয়ার বেশ কিছু তথ্য পুলিশের কাছে এসেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে জড়িতদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদেরকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হলেও এ নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয় সে বিষয়ে দাবি উঠেছে। পুলিশও বলছে, হামলার সঙ্গে জড়িতের বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
এদিকে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ি অন্তত ১৫-২০টি ফেসবুক আইডি থেকে ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হামলার উস্কানি দেয়া, গুজব ছড়ানোর কাজটি করা হয়। এসব আইডি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার গুজব ছড়ানো হয়। কোনো কোনো আইডি থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফসহ আইনশৃংখলাবাহিনী গণহত্যার প্রস্তুতি নিয়েছে। পুলিশের দেহ থেকে মাথা আলাদা করে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রত্যেক মাদ্রাসার ফটকে বিদ্যুতের শক দিয়ে রাখা আহবান জানানো হয় যেন কেউ হামলা করতে এলে তাতে লেগে মারা যান। একাধিক ফেসবুক গ্রুপ থেকেও এমন ধরণের অপপ্রচার চালিয়ে মাঠে নামার জন্য আহবান জানানো হয়। ওই গ্রুপগুলো জেলা শহরে সামাজিক কর্মকা-েও অংশ নিতো। ফেসবুক পেজগুলোর কিছু স্ক্রিনশট এ প্রতিবেদকের কাছেও রয়েছে।
হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখনো কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া টহলও দিচ্ছে আইনশৃংখলা বাহিনী। যদিও পুলিশ বলছে, হেফাজত পরবর্তী তা-ব ও লকডাউনের কারণে শহরে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোমবার বলেন, ‘আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারিদের শনাক্ত করছি। এছাড়া আরো কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে হামলাকারি সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে। নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টিও আমাদের মাথায় আছে।’
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসার প্রতিবাদে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিনদিন হেফাজতের কর্মসূচি চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব।

সর্বশেষ