খেলা ডেস্ক: শেষ দিনে রোমাঞ্চের ডাক দিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। কিন্তু ইংল্যান্ড সাড়া দিল না সেই আহবানে। চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় টিম সাউদি, নিল ওয়্যাগনারদের দারুণ বোলিংয়ের সামনে ইংলিশরা বেছে নিল নিরাপদ পথ। ব্যাট-বলের লড়াই তাই জমল না খুব একটা, আভাস দিয়েও ছড়াল না তেমন উত্তাপ। ড্রয়ে শেষ হলো লর্ডস টেস্ট।
শেষ দিন লাঞ্চের সময় ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ডকে রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ জানায় নিউ জিল্যান্ড। কিন্তু ৭৫ ওভারে ২৭৩ রানের লক্ষ্যে না ছুটে ইংলিশরা এগোয় সতর্ক পথে। জয়ের তাড়না দেখায়নি তারা, সময় কাটানোতেই ছিল মনোযোগ। ডম সিবলি, জো রুটদের সৌজন্যে পূরণ হয় দলের চাওয়া। ৩ উইকেটে তারা ১৭০ রান তোলার পর পাঁচ ওভার বাকি থাকতে ড্র মেনে নেয় দুই দল। শেষ দিনের এমন চিত্র টেস্টের হারিয়ে যাওয়া দিনটি নিয়ে আক্ষেপ বাড়ায় আরও। তৃতীয় দিনের পুরোটাই ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে।
নিজের আগের ছয় ইনিংসে দুই অঙ্কে যেতে ব্যর্থ সিবলি ড্রয়েরর পাশাপাশি নিজের জায়গা ধরে রাখাও নিশ্চিত করেন ব্যাটিং দৃঢ়তায়। ইনিংস শুরু করতে নেমে সোয়া পাঁচ ঘণ্টা ব্যাট করে তিনি অপরাজিত থাকেন ২০৭ বলে ৬০ রানে। আগের দিনগুলোর মতো শেষ দিনের উইকেট যদিও ব্যাটিংয়ের জন্য অতটা সহজ ছিল না।
২ উইকেটে ৬২ রান নিয়ে রোববার দিন শুরু করে নিউ জিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে এগিয়ে থাকা দল দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৬ উইকেটে ১৬৯ রানে। আগের দিন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা নিল ওয়্যাগনাকে দিনের শুরুতে ফিরিয়ে দেন অলি রবিনসন। ম্যাচে অভিষিক্ত পেসারের যা সপ্তম উইকেট। ওপেনার টম ল্যাথাম আগের দিনের ৩০ রানের সঙ্গে যোগ করতে পারেন কেবল ৬ রান। ডম সিবলি ও অলি পোপ নিশ্চিত করেন ড্র।
দারুণ এক ইন-সুইঙ্গারে ল্যাথামকে এলবিডব্লিউ করে ম্যাচে উইকেটের খরা কাটান স্টুয়ার্ট ব্রড। ৪৮৭ বল পর টেস্ট উইকেটের দেখা পান অভিজ্ঞ এই পেসার। এরপর রস টেইলরের ব্যাটিংয়ে ফুটে উঠে নিউ জিল্যান্ডের দ্রুত রান তোলার তাড়া। ২ ছক্কায় ৩৫ বলে করেন তিনি ৩৩ রান। ২৩ রান করে রুটের বলে রবি বার্নসের দুর্দান্ত ক্যাচে থামেন হেনরি নিকোলস। ওয়াটলিং অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ১৫ রান করে।
কিউইদের ইনিংস ঘোষণায় ম্যাচে যে উত্তেজনা ফেরে, তাতে আস্তে আস্তে জল ঢেলে দেন দুই ইংলিশ ওপেনার। অবশ্য দারুণ বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের সুযোগও তেমন দেননি সাউদি, জেমিসনরা। ররি বার্নস ও সিবলির উদ্বোধনী জুটিতে রান কেবল ৪৯ হলেও দুজনে খেলে ফেলেন প্রায় ২৪ ওভার। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান বার্নস এবার ৮১ বলে ২৫ রান করে ওয়্যাগনারের বলে ধরা পড়েন স্লিপে।
আগের ইনিংসের মতো এবারও দুই অঙ্কে যেতে ব্যর্থ হন জ্যাক ক্রলি। আবারও তিনি সাউদির শিকার, আলগা শট খেলে ক্যাচ দেন গালিতে। ৫৬ রানে ২ উইকেট হারানোর দলের হাল ধরেন সিবলি ও রুট। দাঁতে দাঁত চেপে কিউই পেসারদের সামলান দুজন। এই জুটিই অনেকটা নিশ্চিত করে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।
রুটকে ফিরিয়ে ১৫৩ বলে ৮০ রানের জুটি ভাঙেন ওয়্যাগনার। তার লেংথ বলের লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন ইংলিশ অধিনায়ক (৭১ বলে ৪০)। নিউ জিল্যান্ড জয়ের চেষ্টা করে যায় এর পরও। তা সফল হয়নি সিবলির দৃঢ়তায়। অলি পোপের সঙ্গে প্রায় ১৫ ওভার কাটিয়ে ড্রয়ের স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
অভিষেকে প্রথম ইনিংসে রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ডেভন কনওয়ে।