শনিবার,৪,মে,২০২৪
29 C
Dhaka
শনিবার, মে ৪, ২০২৪
Homeজাতীয়শোকাবহ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস

শোকাবহ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস

নতুন কথা রিপোর্ট : ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিপথগামী কিছু বাঙালির হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দুষ্কৃতকারীরা জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুধু বাঙালি জাতিকেই কলঙ্কিত করেনি, রুদ্ধ করে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে। বিশ্বদরবারে বাঙালি জাতির মাথা নুইয়ে দিয়েছিল সেই পৈশাচিক ঘটনা। ইতিহাসের নৃশংস ও মর্মস্পর্শী সেই রাজনৈতিক হত্যাকা-ের ৪৭তম বার্ষিকী সোমবার। গভীর ও বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতি আজ তার শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধুসহ সেদিনের শহীদদের স্মরণ করছে। দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। দিনটি সরকারি ছুটির দিন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা শুধু জাতির পিতাকেই হত্যা করেনি, তাঁর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, একমাত্র সহোদর বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, কৃষক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, যুবনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, বেবী সেরনিয়াবাত, আরিফ সেরনিয়াবাত, সাংবাদিক শহিদ সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আব্দুল নঈম খান রিন্টুসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে ঘাতকরা এই দিনে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিলও খুন হন তার ‘সহকর্মী’ সেনা সদস্যদের হাতে। ঘাতকদের কামানের গোলার আঘাতে মোহাম্মদপুরে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন হতাহত হন। ওই সময় দেশের বাইরে থাকায় ঘাতক চক্রের হাত থেকে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে হত্যাকারীদের প্রতি ঘৃণার বিষবাষ্প। হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে সেদিন বাঙালির ইতিহাসে এক কালিমালিপ্ত অধ্যায় রচিত হয়েছিল। এই বর্বর হত্যাযজ্ঞ ছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়।

আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রদ করে শুরু হয় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কাজ। বিচার শেষের দিকে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আবারও থমকে পড়ে বিচার প্রক্রিয়া। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকে ত্বরান্বিত করে। পরে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি আদালতের চূড়ান্ত রায় কার্যকর হয়। খুনিদের পাঁচ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়। দ-িতদের মধ্যে কয়েকজন এখনও পলাতক রয়েছে। সরকার টাস্কফোর্স গঠন করে পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

শোকাবহ ১৫ আগস্টে গোটা জাতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও ভাবগম্ভীর আর বেদনাবিধুর পরিবেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন করছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠন হাতে নিয়েছে নানা কর্মসূচি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরগুলো পালন করবে নিজ নিজ কর্মসূচি। বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোতেও শোক দিবসে কর্মসূচি পালন করছে। পত্রপত্রিকাগুলো প্রকাশ করছে বিশেষ সংখ্যা। টেলিভিশনগুলোকে প্রচার হবে বিশেষ অনুষ্ঠান।

ওয়ার্কার্স পার্টি : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিও সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এসব কর্মসূচির মধ্য রয়েছে আলোচনা সভা, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা প্রভৃতি।

সর্বশেষ