মঙ্গলবার,৩০,এপ্রিল,২০২৪
33 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
Homeসীমানা পেরিয়েসিরিয়ার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চায় চীন: শি জিনপিং

সিরিয়ার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চায় চীন: শি জিনপিং

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আলোচনা শেষে সিরিয়ার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব ঘোষণা করেছেন শি। দুই নেতা এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে এই সাক্ষাৎ করেন।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং তার সিরিয়ার প্রতিপক্ষ বাশার আল-আসাদ শুক্রবার যৌথভাবে চীন-সিরিয়া কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন।’

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়াকে পুনর্গঠনের জন্য আর্থিক সহায়তা চাইছেন আসাদ। ২০০৪ সালের পর এটিই ছিল আসাদের প্রথম চীন সফর।

অপরদিকে ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ বাধার পর মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের কোনো দেশের মধ্যে চীন অন্যতম যেখানে আসাদ সফর করেছেন। গৃহযুদ্ধে দেশটিতে ৫ লাখের বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে বাস্তুহারা হয়েছে আরও লাখ লাখ বাসিন্দা। এছাড়াও দেশটির অবকাঠামো ও শিল্প ব্যাপক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আসাদ-শি

পশ্চিমা অবজ্ঞাপ্রাপ্ত নেতাদের তালিকায় আসাদ হচ্ছেন সর্বশেষ ব্যক্তি যাকে সম্মানিত করেছে বেইজিং। এছাড়াও চলতি বছর ভেনেজুয়েলার নেতা নিকোলাস মাদুরো, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা চীন সফর করেছেন।

দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ‘আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের পরীক্ষা প্রতিরোধ করেছে’ বলে মন্তব্য করেন শি। তিনি বলেন, ‘চীন বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা, একতরফা ধমকানোর বিরোধিতা, জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সিরিয়াকে সমর্থন করে।’

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা অনুসারে আসাদ বলেছেন, ‘সিরিয়ার জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আপনি যা কিছু করেছেন এবং তাদের বিচারের জন্য আপনি যা করেছেন তার জন্য চীন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সময় এবং পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ আজ একটি বহুমুখী বিশ্ব গঠিত হচ্ছে যা বিশ্বের ভারসাম্য এবং স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করবে। আমি আশা করি, আমাদের আজকের বৈঠকটি সমস্ত ক্ষেত্রে ব্যাপক আকারে এবং দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করবে।’

বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আসাদের সফর দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। বেইজিং দীর্ঘদিন ধরে দামেস্ককে কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে আসছে, বিশেষ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যেখানে চীন একটি স্থায়ী সদস্য।

সিরিয়া

বিশ্লেষকরা বলছেন, আসাদের সফরটি তার শাসনামলের মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিচ্ছিন্নতার কয়েক বছর পর আন্তর্জাতিক স্তরে ফিরে আসার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভে আসাদের দমন-পীড়নের পর সিরিয়ার যুদ্ধ শুরু হয় যা পরবর্তী একটি মারাত্মক সংঘাতে পরিণত হয়। পরে দেশটিতে বিদেশি শক্তি এবং জিহাদিদের সংশ্লিষ্টতা বেড়ে যায়।

চীনকে মধ্যপ্রাচ্যে তার তৎপড়তা বাড়াতে দেখা গেছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। এরই মধ্যে আসাদের সফর বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।

চলতি বছর বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় চুক্তির অধীনে দীর্ঘকালের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব এবং দামেস্ক-সমর্থক ইরান নিজেদের কূটনীতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে এবং তাদের নিজ নিজ দূতাবাস পুনরায় চালু করতে সম্মত হয়।

এক দশকেরও বেশি সময়ের আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটিয়ে মে মাসে সৌদি আরবে একটি শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে পুনরায় আরব লীগে যোগ দেয় সিরিয়া।

সর্বশেষ